ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের পশ্চিম জগন্নাথপুর গ্রামে বছরের শুরুতে চালু হয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল। দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের আর্থিক সহায়তায় স্থানীয় বসুন্ধরা শুভসংঘের তত্ত্বাবধানে স্কুলটি পরিচালিত হচ্ছে। চল্লিশজন শিশু শিক্ষার্থী প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষা গ্রহণ করছে। শুক্র ও শনিবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম চলে।
বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে বেশির ভাগই নিম্ন আয়ের দরিদ্র পরিবারের শিশুরা লেখাপড়া করছে। দুজন শিক্ষক নিয়মিত শিশুদের পাঠদান করেন। আশপাশে কোনো স্কুল ছিল না এখানে। বেশ দূরে স্কুল থাকায় অনেক অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চাইতেন না।
গ্রামের দরিদ্র পরিবারের শিশুদের কথা বিবেচনা করে এই গ্রামে স্কুল চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বসুন্ধরা শুভসংঘ। শুরুর পর থেকে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষকদের পাঠদানের কৌশল মানসন্মত ও মানবিক হওয়ায় অনেক অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের নিয়ে আসছেন। এখন ওই এলাকার অভিভাবকদের আস্থা ও ভরসাস্থল হয়ে উঠেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল। স্কুলের আশপাশের কয়েকটি গ্রামের অনেক অভিভাবক এখন তাঁদের সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে ভর্তি করাতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
অভিভাবকরা মনে করেন অন্যান্য স্কুলের চেয়ে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল অনেক উন্নত। এখানে দায়িত্বরত শিক্ষকরা শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন নিজের সন্তানের মতো। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিশুসুলভ আচরণ করেন, যার কারণে শিশুদের দিন দিন লেখাপড়ায় আগ্রহ বাড়ছে। এরই মধ্যে স্কুলটি পরিদর্শন করেছেন ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহীন আকতার। স্কুলের পাঠদান কৌশল ও পরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
শিক্ষার্থী সানভি আক্তারের মা উর্মি আক্তার বলেন, ‘কয়েক মাস আগেও তাঁর শিশুকন্যাটি বাসায় খুব কম কথা বলত। বেশির ভাগ সময় চুপচাপ বসে অথবা শুয়ে থাকত। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে নিয়মিত হওয়ার কিছুদিন পর থেকে সানভির মধ্যে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন বাড়িতে সবার সঙ্গে কথা বলে, বড়দের সালাম দেয়। সে বেশ কয়েক দিন ধরেই স্কুলে যাওয়ার আগে বাড়িতেই উচ্চৈঃস্বরে ‘সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি, সারা দিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি’ এমন নানা কবিতার লাইন একাধিকবার নিজে নিজেই পাঠ করে। লেখাপড়ার প্রতি তার এমন আগ্রহ সৃষ্টি করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল।’
আরেক শিক্ষার্থী মিয়াজের বাবা তাহেরুল বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল এখন এলাকার অনেকের নজর কেড়েছে। এই স্কুলে লেখাপড়ার মান অনেক ভালো। বিশেষ করে শিশুরা যখন শিক্ষকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উচ্চৈঃস্বরে ছন্দাকারে কবিতা অথবা অন্য কিছু পড়ে, তখন স্কুলচত্বর ও বাইরে অন্য রকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সকালের মিষ্টি রোদে শিশুদের এমন ছন্দময় ধ্বনি অভিভাবকসহ উপস্থিত সবার মনকে উদ্বেলিত করে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’
শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ নোমানের বাবা মোতাহার হোসেন বলেন, ‘লেখাপড়ার পাশাপাশি পারিবারিক শৃঙ্খলা শেখানোর যে কাজটি বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে দেওয়া হচ্ছে, তা খুবই প্রশংসনীয়। এমন স্কুলে শিক্ষা গ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা ছোটবেলা থেকেই আদর্শ মানুষ হয়ে বেড়ে উঠবে। বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।’ সাফা ইসলামের মা নুরজাহান বেগম বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে নতুন বছরে বই, খাতা, কলম, স্কুলব্যাগ, পোশাক, জুতাসহ সব কিছু বিনা মূল্যে দেওয়া হয়েছে, যা অনেকের জন্য বিশ্বাস করাই কঠিন। এখানে আমার সন্তানকে পড়াতে কোনো খরচ হয় না। আশপাশের স্কুল ও মাদরাসাগুলো অনেক দূরে, সেই স্কুলগুলোর শিক্ষার মানও খুব ভালো নয়। বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের পাঠদানের পরিবেশ অনেক সুন্দর।’ স্কুলের শিক্ষক সাথি আক্তার বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের লেখাপড়ার মান ও শৃঙ্খলা দেখে অনেক অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের এখানে পড়াতে আগ্রহী হচ্ছেন। আসনসংখ্যা সীমিত থাকায় চলতি বছর আর বাড়তি শিক্ষার্থী নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শিশুদের লেখাপড়ার আগ্রহ বাড়াতে পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও বিভিন্ন ধরনের ছড়া, কবিতা, গল্প শোনানো হয় এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও গল্প শোনা হয়। পাঠদানের পাশাপাশি পারিবারিক শৃঙ্খলাও শিশুদের শেখানো হচ্ছে। তাই খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই স্কুলের সুনাম ছড়িয়েছে।’
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহীন আকতার বলেন, ‘এই শিশুরাই আগামীর বাংলাদেশ গড়বে। প্রত্যন্ত গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল। স্মার্ট ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে সরকারের পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের আর্থিক সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল অনেক প্রশংসার দাবি রাখে। জেলা শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে এই স্কুলের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে। বসুন্ধরা শুভসংঘের এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকুক এবং ছড়িয়ে যাক সারা দেশে।’
SOURCE : কালের কণ্ঠবসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণে স্বাবলম্বী ২৯ হাজার পরিবার
Bashundhara Foundation’s Interest-Free Loans Empower 29,000 Families to Become Self-Reliant
দুর্গাপুরে এতিম ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করল বসুন্ধরা শুভসংঘ
Bashundhara Shuvosangho Distributes Educational Materials Among Orphans and Underprivileged Students in Durgapur
বাঞ্ছারামপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে ৬০ নারীকে সেলাই মেশিন বিতরণ
60 Underprivileged Women Receive Sewing Machines in Bancharampur through Bashundhara Shuvosangho
নারায়ণগঞ্জে অসহায় বিধবা রামরতি রবিদাসের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ
Bashundhara Shuvosangho Supports Struggling Widow Ramrati Rabidas in Narayanganj
বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে পাবনায় ১০০ নারী পেলেন সেলাই মেশিন
বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণে স্বাবলম্বী হাজারো পরিবার